কার্যভিত্তিক সংগঠন

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | | NCTB BOOK
5

মি. কবীরের শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজের বিস্তৃতি বাড়ায় উৎপাদন ব্যবস্থাপককে সহযোগিতা করার জন্য একজন যন্ত্র প্রকৌশলী ও একজন কোয়ালিটি নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞকে সহকারী উৎপাদন ব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে । বিভাগীয় কর্তৃত্ব এককভাবে উৎপাদন ব্যবস্থাপকের থাকায় তার দ্বারা এ দু'জন সহকারী উপেক্ষিত হন।

ফলে তাদের যোগ্যতা কোনো কাজে আসছে না । এখন উৎপাদন সংক্রান্ত কাজ সঠিকভাবে তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব একজন সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (উৎপাদন) বা সহসভাপতি (উৎপাদন)এর অধীনে রেখে উৎপাদন বিভাগের কাজকে যন্ত্র প্রকৌশল, কাঁচামাল ব্যবস্থাপনা, মান নিয়ন্ত্রণ, মেরামত ও সংরক্ষণ এ চারটা বিভাগে ভাগ করে পদস্থ বা বিশেষজ্ঞ কর্মীদের সীমিত সরলরৈখিক কর্তৃত্ব সহযোগে বিভাগীয় প্রধান নিযুক্ত করা হয়েছে। এতে কারও উপেক্ষিত হওয়ার আশঙ্কা আর নেই । বরং প্রত্যেকেই নিজস্ব পরিসরে যোগ্যতা প্রদর্শন করে দক্ষতার প্রমাণ দিতে পারছে । এক্ষেত্রে মি. কবীরের উৎপাদন বিভাগের জন্য গড়া নতুন সংগঠন কাঠামো হলো কার্যভিত্তিক সংগঠন ।

যে সংগঠন কাঠামোতে কাজকে প্রকৃতি অনুযায়ী ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে তার দায়িত্ব বিশেষজ্ঞ কর্মীদের ওপর সীমিত সরলরৈখিক কর্তৃত্ব সহযোগে অর্পণ করা হয় তাকে কার্যভিত্তিক সংগঠন বলে । সরলরৈখিক ও পদস্থ কর্মী সংগঠনে লক্ষণীয় যে, সরলরৈখিক নির্বাহীকে সহযোগিতা করার জন্য এক বা একাধিক পদস্থ, সহযোগী বা বিশেষজ্ঞ কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। উদ্দেশ্য থাকে উভয় ধরনের কর্মী বা নির্বাহীগণ মিলে-মিশে দায়িত্ব পালন করবেন । কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, উভয় ধরনের নির্বাহীর মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির কারণ হয় । সকল কর্তৃত্ব সরলরৈখিক নির্বাহীর থাকায় অনেক সময় যোগ্য বিশেষজ্ঞ সহকারী তার দ্বারা উপেক্ষিত হয়। এতে বিশেষজ্ঞ কর্মী হতাশ থাকেন এবং তার নিয়োগের উদ্দেশ্যই অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্যই কার্যভিত্তিক সংগঠন কাঠামোর উদ্ভব ঘটেছে । এফ. ডব্লিউ. টেইলর এরূপ সংগঠন কাঠামোর উদ্ভাবক ।

বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ও বিপণনের মত বিভাগগুলোর জন্য এ ধরনের সংগঠন কাঠামো খুবই কার্যকর । নিম্নে এ ধরনের সংগঠন কাঠামো রেখাচিত্রে প্রদর্শিত হলো:

চিত্র : কার্যভিত্তিক সংগঠন কাঠামো চিত্র

কার্যভিত্তিক সংগঠনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো :

১. কাজের ধরন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সকল কাজকে এক্ষেত্রে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করা হয়;

২. এর প্রতিটি বিভাগ একযোগে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে সেবা প্রদান করে;

৩. এর প্রত্যেক বিভাগের দায়িত্ব একজন বিশেষজ্ঞের ওপর ন্যস্ত করা হয়;

৪. যিনি উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত সরলরৈখিক নির্বাহীর অনুমোদনক্রমে সীমিত কর্তৃত্ব ভোগ করেন এবং

৫. বৃহদায়তন শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বিভাগে এ ধরনের সংগঠন কাঠামো অধিক ব্যবহৃত হয় ।

Content added By
Promotion